এ বি এন এ : উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই রায় দেন। কেন ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা হবে এই মর্মে জারিকৃত রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দিলেন আদালত। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এ রকম আইন দুঃখজনক। আদালতে রিটকারীর আইনজীবী ছিলেন মনজিল মোর্শেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপলি করা হবে। এর আগে সংশোধনীটির বৈধতার প্রশ্ন তুলে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ১০ মার্চ রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন। এই সংশোধনীর আলোকে বিচারপতি অপসারণের জন্য একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করেছে সরকার। সম্প্রতি খসড়া আইনটিতে মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।
বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। পরে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আইন-২০১৪-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের নয়জন আইনজীবী রিট আবেদনটি করেন। রিটকারীরা হলেন- অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, ইমরুল কাউসার, মামুন আলিম, এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, মাহবুবুল ইসলাম, নুরুল ইনাম বাবুল, শাহীন আরা লাইলী ও রিপন বাড়ৈই। রিট আবেদনে বলা হয়, এই সংশোধনী বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করবে। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অন্যতম অংশ। কিন্তু এই সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী। আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের ডিভিশন বেঞ্চ ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।